মেঘনায় জাটকা সংরক্ষণ, জ্বালানি সংকটে অভিযান ব্যাহত

মেঘনায় জাটকা সংরক্ষণ, জ্বালানি সংকটে অভিযান ব্যাহত

উপজেলা সংবাদ সদর উপজেলা স্লাইড

মেঘনায় জাটকা সংরক্ষণ, জ্বালানি সংকটে অভিযান ব্যাহত

Screenshot_1স্টাফ রিপোর্টার : মেঘনায় জাটকা সংরক্ষণে জ্বালানি সংকটে অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার প্রতি বছর জাটকা সংরক্ষণ ও প্রজনন সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করে।

এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ একযোগে কাজ করে।

বিশেষ করে অভয়াশ্রম এলাকায় নৌ পুলিশের টহল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে অভিযানের জন্য বরাদ্দকৃত জ্বালানি অত্যন্ত সীমিত হওয়ায় কার্যকর টহল পরিচালনা করতে গিয়ে নৌ পুলিশকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রম এলাকায় মার্চ ও এপ্রিল মাসে জাটকার বিচরণ বেশি থাকে।

এ কারণে এই সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে।

চাঁদপুরে একটি নৌ থানা এবং ছয়টি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে, যেখানে প্রতিদিন নৌ পুলিশের দলগুলো স্পিডবোট ব্যবহার করে টহল পরিচালনা করে।

কিন্তু জ্বালানির অপ্রতুলতার কারণে টহল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

নৌ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চাঁদপুর নৌ থানার নিজস্ব একটি স্পিডবোট থাকলেও সেটি অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে অভিযান পরিচালনার জন্য তাদের প্রতিদিন ভাড়াকৃত স্পিডবোট ব্যবহার করতে হয়।

একটি ৭৫ সিসি স্পিডবোট প্রতি ঘণ্টায় ৪০ লিটার জ্বালানি খরচ করে, আর ২০০ সিসির বোটে সেই খরচ দাঁড়ায় ৬০ লিটার।

কিন্তু নৌ পুলিশের জন্য বরাদ্দকৃত দৈনিক জ্বালানি মাত্র ৮ থেকে ১০ লিটার, যা অভিযানের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রতুল।

নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বক্তব্য

চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএসএম ইকবাল জানান,

প্রতিদিন চারটি টহল দল অভিযানে অংশ নেয়। প্রতিটি দলের জন্য অন্তত ১৫০ লিটার জ্বালানি প্রয়োজন, কিন্তু বরাদ্দ এতটাই সীমিত যে পূর্ণমাত্রায় টহল চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক জানান,

বর্তমানে অভয়াশ্রম এলাকায় মোট নয়টি স্পিডবোট ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে ২৩০ সিসি স্পিডবোট প্রতিদিন গড়ে ২০০ লিটার জ্বালানি খরচ করে। কিন্তু পর্যাপ্ত জ্বালানি ও জনবল না থাকায় অভিযান পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপারের বক্তব্য

চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান,

নৌ পুলিশ বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত মাসিক ৩,০০০ লিটার জ্বালানি দিয়ে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

৭৫ সিসি স্পিডবোট দিয়ে মাত্র তিন ঘণ্টার অভিযানে ১৪০ লিটার জ্বালানি প্রয়োজন হয়।

এত অল্প পরিমাণ বরাদ্দে পুরো দুই মাস অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে।

এছাড়া, চাঁদপুর নৌ থানায় পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধার অভাবও অভিযানের ক্ষেত্রে বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

থানার হাজতখানা এখনো প্রস্তুত হয়নি, ফলে আটককৃত জেলেদের আদালতে নেওয়া-আনার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।

মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ মনে করছে,

অভিযান সফল করতে হলে জ্বালানি বরাদ্দ বাড়ানো এবং টহল দলকে আরও সুসংগঠিত করা জরুরি।

অন্যথায়, জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে, যা ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *