মতলব উত্তরের হাবিব উল্লাহ হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি : মতলব উত্তরের হাবিব উল্লাহ হত্যা মামলার মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মাত্র ২১ ঘণ্টার টানা অভিযানে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মোঃ কামাল মীরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব (পিপিএম)।
পুলিশ জানায়, গত ১১ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ১১টার দিকে মতলব উত্তর উপজেলার ৩নং সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের পুকুরে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়।
পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পরিচয় না মিললেও পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়—
মৃত ব্যক্তি মোঃ হাবিব উল্লাহ (৫০), পুটিয়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা এবং মনোয়ারা বেগম মনুর স্বামী।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হাবিব উল্লাহর স্ত্রী অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা নম্বর এফআইআর-১৮; জি.আর-৪২০, তারিখ ১১ জুলাই ২০২৫। মামলা রুজু হয় দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারায়।
মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল কবিরের তত্ত্বাবধানে ওসি মোঃ রবিউল হক এবং
তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডলের নেতৃত্বে একটি টিম নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালায়।
অবশেষে অভিযুক্ত মোঃ কামাল মীরাকে (৫৫), পিতা মৃত খালেক মীরা, সাং রাজারচর, বরিশাল জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামির বক্তব্য
গ্রেপ্তারকৃত আসামি পুলিশকে জানায়, নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকায় একটি চায়ের দোকানে হাবিব উল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
পরিচয়ের সূত্র ধরে কামাল মীরা দ্বিতীয় বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করলে হাবিব উল্লাহ তাকে একজন মেয়ে খুঁজে দেয়ার আশ্বাস দেন।
এর বিনিময়ে তিনি কামালের কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
ঘটনার দিন ১০ জুলাই, হাবিব উল্লাহ কামালকে মেয়েটিকে দেখানোর কথা বলে মতলব উত্তর থানার গোপালকান্দি এলাকায় নিয়ে যান।
সন্ধ্যায় শাহ্ সোলেমান লেংটার মাজারে ঘোরাঘুরির পর তারা পাশের পুকুর পাড়ে যায়। সেখানে কথাকাটাকাটি শুরু হলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কামাল হাবিব উল্লাহকে আঘাত করে এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। পরে তিনি পালিয়ে নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন করেন।
তবে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতায় শেষ রক্ষা হয়নি। একটানা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, “এই ঘটনায় আমরা খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তদন্ত এখনও চলমান, এবং শিগগিরই চার্জশিট দাখিল করা হবে।

