মতলব উত্তরে পিআইও সেলিম খানের অপসারণ দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন

মতলব উত্তরে পিআইও সেলিম খানের অপসারণ দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন

উপজেলা সংবাদ মতলব উত্তর উপজেলা স্লাইড

মতলব উত্তরে পিআইও সেলিম খানের অপসারণ দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন

মতলব উত্তরে পিআইও সেলিম খানের অপসারণ দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধনমতলব উত্তর প্রতিনিধি : মতলব উত্তর উপজেলায় স্থানীয়রা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গালিমখাঁ বাংলা বাজারের বেরিবাঁধ এলাকায় অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে স্থানীয়দের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন যে, পিআইও সেলিম খানের নিয়ন্ত্রণে থাকা সরকারি প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলে আসছে। তারা বলেন, কোটি কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দকৃত উন্নয়ন প্রকল্প কাগজে শতভাগ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে মাত্র ২০-২৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুরো অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব মানববন্ধনে বলেন, “গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, স্কুল-কলেজ ভবন সংস্কার, সড়ক মেরামত ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পে নিয়মিত অনিয়ম হয়। অনেক প্রকল্পে সামান্য কাজের বিল জমা দিয়ে বাকিটা টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে শুধু লেভেলিং-ড্রেসিংয়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতানো হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, উপজেলা পর্যায়ে ২০% রিজার্ভ বরাদ্দ থাকলেও কলাকান্দা ও এখলাসপুর ইউনিয়নে প্রকল্পগুলোতে শুধু নামমাত্র কাজ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বোরচর, মোহনপুর, গজরা, ফতেপুর পশ্চিম, বাগানবাড়ীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক সংস্কার প্রকল্পেও একই রকম অনিয়মের অভিযোগ উঠে।

দু’জন অন্য যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান মল্লিক জানান, সরকারি খাদ্য বিতরণ প্রকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে প্রতি টন ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হয়। বিভিন্ন সেতু নির্মাণ প্রকল্পেও প্রায় ২০ কোটি টাকার মধ্যে ১০ শতাংশ ঘুষ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাইড ভিজিটে ছাড়া কোনো প্রকল্পের অগ্রগতি রিপোর্টও সঠিকভাবে দেওয়া হয় না।

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন যে, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির টাকায় পিআইও সেলিম খান রাজধানীর আফতাবনগরে ১০ কাঠা জমিতে ১০ তলা বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করেছেন। মোহাম্মদপুরে তার চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি নামে-বেনামে সম্পদের একটি বড় শৃঙ্খল গড়ে তুলেছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পিআইও সেলিম খান দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অর্থের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনিয়ম করছেন। সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি, ১৯৭৯ এর পরিপন্থী এই কর্মকাণ্ডে স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা দাবি করেন, দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং সেলিম খানকে মতলব উত্তর থেকে অপসারণ করা হোক।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হাবিবুর রহমান হাবিব, মেহেদী হাসান মল্লিক, ছাত্র নেতা এম.এম আবু বক্কর, রাহাত সরকার, সাকিব, মাহিবী, খাগুরিয়া গ্রামের মো. মতিন বেপারী, সবুজ প্রধান, ছোটকিনাচক গ্রামের মো. আরাফাত, হাঁপানিয়া গ্রামের সাব্বির, স্থানীয় পারভেজ, আসমা আক্তার ও সুমি আক্তার।

এ বিষয়ে পিআইও মো. সেলিম খান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কোনো কাজের বিল অন্যায়ভাবে আগাম কাউকে দিইনি। বরং কেউ কাজ না করলে তার বিল আমি কর্তন করেছি। কিছু মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমি আশা করি উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করবেন।”

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *