মতলব উত্তরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী চাষ, কৃষকদের মুখে হাসি
ম
তলব উত্তর প্রতিনিধি : মতলব উত্তরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ।
এর স্বল্প খরচ ও অধিক লাভজনক ফলন কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে।
সূর্যমুখী ফুলের হাসি এখন আর শুধু সৌন্দর্য নয়, বরং তা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এ বছর চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ চাষই কৃষি অফিসের প্রদর্শনী ও প্রণোদনার মাধ্যমে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতি বছরই এ অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষের পরিমাণ বাড়ছে, এবং কৃষকরা ভালো ফলন আশা করছেন।
মতলব উত্তর উপজেলাটি বৈচিত্রময় কৃষি চাষের জন্য পরিচিত।
এখানে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
এই সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকরা প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপন্ন করতে সম হয়েছেন।
বিশেষ করে, সূর্যমুখী ফুলের চাষের জন্য এই অঞ্চল একেবারে উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। সূর্যমুখী তেল কোলেস্টেরল মুক্ত, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং শরীরের দুর্বলতা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
এছাড়া, সূর্যমুখী তেল অন্য যে কোন তেলের চেয়ে দশগুণ বেশি পুষ্টি প্রদান করে, যা এর চাহিদা বাড়াচ্ছে।
কৃষিবিদদের মতে, সূর্যমুখী ফুলের চাষ নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করে শুরু হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে এই ফুলের ফসল সংগ্রহ করা যায়।
সূর্যমুখী ফুলের চাষে খুব বেশি রাসায়নিক সার প্রয়োজন হয় না এবং মাত্র দুটি সেচই যথেষ্ট।
প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়, আর একেকর জমি থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। এছাড়া, সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
এ বছর, মতলব উত্তরের ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে মোট ৭ হেক্টরের অধিক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে।
মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ দেখে আসছেন বহু দর্শনার্থী। কৃষকরা ভালো ফলনের আশা করছেন।
মাঠ পরিদর্শন
মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চাষী জসীম উদ্দিন তাঁর গ্রামের বিস্তীর্ণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তিনি এই কাজটি তৃতীয়বারের মতো করছেন এবং আশাবাদী যে এবার ভালো ফলন পাবেন।
তিনি বলেন,
“আমি গত দুই বছরে সূর্যমুখী চাষ করেছি। প্রথমবার লাভবান হয়েছিলাম, কিন্তু দ্বিতীয়বার প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফলন কম ছিল। তবে এবার আশা করছি লাভবান হবো।”
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান,
এই এলাকায় সূর্যমুখী ফুলের চাষে উপযোগী পরিবেশ রয়েছে এবং ভালো ফলন পাওয়া যায়।
কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী করতে তারা নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছেন।
তাঁর মতে, অন্যান্য তেলের তুলনায় সূর্যমুখী তেলের চাহিদা অনেক বেশি এবং এই চাষ কৃষকদের জন্য লাভজনক।

