ভাটিয়ালপুর বাজার ইজারা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে উত্তেজনা, আহত অন্তত ১০ জন
ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি : ভাটিয়ালপুর বাজার ইজারা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুর বাজারে ইজারা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং বাজার এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের পাশে অবস্থিত ভাটিয়ালপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ইজারাদারের প্রতিনিধির সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই বাজারে দীর্ঘদিন ইজারা ব্যবস্থা ছিল না।
কিন্তু চলতি বাংলা সনের শুরু থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বাজারটির ইজারা প্রদান করে।
ইজারাটি লাভ করেন উপজেলার যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল মতিন।
তার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া বাজারে দৈনিক আদায়ের জন্য গেলে কিছু ব্যবসায়ী তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান।
একপর্যায়ে গোলাম কিবরিয়াকে ‘চাঁদাবাজ’ দাবি করে প্রতিবাদ জানানো হয়, এবং এই প্রতিবাদ সহিংস রূপ নেয়।
বাজারে ক্রয় বিক্রয়
এই বাজারে প্রতিদিন সকালে একাধিক মাছ আড়ত বসে, যেখানে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা মাছ কেনাবেচায় অংশ নেন। মৌসুমে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে বাজারটির ইজারা কার্যকর হলেও, অনেক ব্যবসায়ী এই ব্যবস্থাকে অতিরিক্ত চাপ হিসেবে দেখছেন। তারা দাবি করেছেন, বাজারটিতে পৌরসভার ন্যূনতম অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় ইজারা অনৈতিক।
ঘটনার একপক্ষের দাবি, ইজারাদারের লোকজন স্থানীয় কিছু তরুণকে সঙ্গে নিয়ে আক্রমণ চালায়, যাতে কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হন। অন্যদিকে ইজারাদার আব্দুল মতিন অভিযোগ করেন, তার প্রতিনিধির ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এতে ইন্ধন দিয়েছেন।
পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বাজারটি গত ১৬ বছর ধরে ইজারামুক্ত ছিল এবং এখানে প্রায় এক হাজার মানুষের জীবিকা জড়িত। নতুন ইজারার মাধ্যমে কিছু লোক আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে, যা সাধারণ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি ব্যবসায়ীদের দাবিকে সমর্থন জানান।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে জেলা প্রশাসকের কাছে ইজারা বাতিলের আবেদন করা হয়েছে।”

