চাঁদপুরে টানা বৃষ্টিতে ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, ব্যাপক জলাবদ্ধতা
স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরে টানা বৃষ্টিতে ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
টানা দুদিনের বৃষ্টিতে শহর ও আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা।
কখনো হালকা, আবার কখনো ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে নিচু এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো।
এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ ও দিনমজুর শ্রেণির জনগণ।
পাশাপাশি শহরের বেশ কিছু বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, টানা ৪৮ ঘণ্টায় বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত পরিমাণ ছিল ১২৩ মিলিমিটার। এমন পরিস্থিতিতে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত থেকেই ভারী বর্ষণে শহরের নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমতে শুরু করে।
বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড, নাজির পাড়া, পালপাড়া, আলিমপাড়া, রহমতপুর আবাসিক এলাকা ও আশপাশের বেশ কিছু সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে রয়েছে।
এসব স্থানে চলাচল করছে না রিকশা ও সিএনজি। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
শহরের মিশন রোড এলাকার বাসিন্দা আলম খান জানান, ক্রেতার অভাবে দোকান খরচই উঠে আসছে না।
অপরদিকে, বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকার দোকানদার বেলাল হোসাইন বলেন, “দোকানের সামনে হাঁটু পানি জমে থাকায় কেউ দোকানে আসছে না।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে দোকানের ভেতরেই পানি ঢুকে যাবে।”
জলাবদ্ধতার শিকার
শুধু শহরেই নয়, জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কেও দেখা দিয়েছে ভাঙাচোরা ও কাঁদাময় পরিস্থিতি।
শাহরাস্তি ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গত বছরের মতো এবারও জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। এর ফলে মানুষের যাতায়াতে চরম অসুবিধা দেখা দিয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুর-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচলেও দেখা দিয়েছে সিডিউল বিপর্যয়।
পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় কোনো কোনো লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর ছাড়ছে। যাত্রীসঙ্কট এবং আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে এই সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মো. শোয়েব জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আগামী আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
তাই জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
চাঁদপুরের নাগরিক জীবনে এই বর্ষা মৌসুম যেন এক চরম পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে জনদুর্ভোগ আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

