হাজীগঞ্জে গ্রাম পুলিশের ঘর থেকে ২০ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার, তদন্তে প্রশাসন
রেজাউল করিম নয়ন : হাজীগঞ্জে গ্রাম পুলিশের ঘর থেকে ২০ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধারের পর তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।
উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে এক গ্রাম পুলিশের ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ স্বপন সাহা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,
বুধবার (১৮ জুন) সকালে ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত স্বপন সাহার বসতঘর থেকে মোট ২০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই স্বপন সাহা স্থানীয় কয়েকজনের কাছে গোপনে চাল বিক্রি করে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিন সকালে একজন বাসা থেকে চাল নিয়ে বের হতে দেখায় সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপর স্থানীয় কয়েকজন ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পান—সেখানে ৫০ কেজির ৯ বস্তা,
৩০ কেজির ৫ বস্তা এবং ১২টি খালি বস্তা রাখা রয়েছে। স্বপন সাহা আরও স্বীকার করেন যে, এরইমধ্যে ৬ বস্তা চাল তিনি বিক্রি করেছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবনে আল জাবেদ হোসেন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
পরে উদ্ধারকৃত চাল জব্দ করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ স্বপন সাহা জানান, এগুলো ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কর্মসূচির চাল, যা তিনি কিনে রেখেছেন।
তার দাবি, কিছু চাল তার নিজের কার্ডের বরাদ্দ থেকেও এসেছে।
চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের বক্তব্য
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, “কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে সরকারিভাবে ২ হাজার ১২৮টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ১৬৮টি কার্ডের প্রতিটিতে ১৫০ কেজি করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। চাল বিতরণের দায়িত্ব ছিল ইউনিয়ন সচিব,
সংশ্লিষ্ট মেম্বার রশিদ ও গ্রাম পুলিশ স্বপন সাহার ওপর। এখন দেখা যাচ্ছে, এসব চালের কিছু অংশ স্বপনের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে আল জাবেদ হোসেন জানান, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চাল জব্দ করেছি।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে স্বপন সাহার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে কেউ যেন অনিয়ম করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকা উচিত।
ঘটনায় যুক্ত প্রতিটি ব্যক্তির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

