চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটিতে তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের পিংরা বাজার সংলগ্ন তালুকদার বাড়িতে এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়দের দাবি, ঘটনাটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বরং এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে গভীর ষড়যন্ত্র।
রবিবার (১৫ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ওই বাড়িতে সীমা আক্তার (১৮) নামে ওই তরুণীর মৃত্যু ঘটে।
তিনি তালুকদার বাড়ির প্রবাসী শাহাদাতের স্ত্রী এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা আজিমের মেয়ে।
সীমা এক সন্তানের জননী ছিলেন।
ঘটনার পর গোপনীয়তা এবং দাফনের চেষ্টা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীমার মৃত্যুর পর পরিবার ও তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করেন।
পুলিশকে অবহিত না করেই দ্রুত দাফনের প্রস্তুতি চলছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। সন্ধ্যার দিকে খবরটি গোপন সূত্রে সাংবাদিকদের কাছে
পৌঁছালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। পরে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী ভূমিকায় দাফনের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
পরিবারের অভিযোগ ও সন্দেহ
সীমার ভাই শরীফ গণমাধ্যমকে জানান, “দুই বছর আগে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো।
কয়েক মাস আগে তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নেয়।
কিছুদিন আগে সীমার পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে এবং তার পায়ে নয়টি সেলাই দিতে হয়, অথচ আমরা তখন কিছুই জানতাম না।”
সীমার বড় বোন জানান, “স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে সীমা স্ট্রোক করেছে। কিন্তু আমরা এসে দেখি তার মরদেহ খাটে রাখা।
আমাদের কাছে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে না—এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে।”
পুলিশি পদক্ষেপ ও তদন্ত
খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তা পাঠানো হয়।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, “আমরা মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর মধ্যে উৎকণ্ঠা ও আলোচনা
সীমার মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পর পুরো এলাকায় নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এটি আত্মহত্যা নয় বরং হত্যার ঘটনা হতে পারে।
এখন সবার দৃষ্টি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকে, যা এই মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা ও দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি গণমাধ্যমেরও নজরদারি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।

