হাইমচরে চায়ের দোকানদারের প্রভাবে বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা

হাইমচরে চায়ের দোকানদারের প্রভাবে বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা

উপজেলা সংবাদ স্লাইড হাইমচর উপজেলা

হাইমচরে চায়ের দোকানদারের প্রভাবে বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা

স্টাফ রিপোর্টার: হাইমচরে চায়ের দোকানদারের প্রভাবে বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। চাঁদপুরের হাইমচর থানার সামনে চায়ের দোকান পরিচালনাকারী নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে বাড়ির নিরীহ বাসিন্দাদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

তবে, নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল আমিন দাবি করেছেন,

তিনি ন্যায়সঙ্গতভাবেই জমির মালিকানা রক্ষায় আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছেন।

নির্মাণকাজে বাধা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ

গত ৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেলে উত্তর আলগী দুর্গাপুরের ৪নং ওয়ার্ডের কমলাপুর গ্রামে গিয়ে বিষয়টি জানা যায়।

ওই বাড়ির বাসিন্দা নাজমা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকায় তিনি তিন সন্তান নিয়ে নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে বসবাস করেন।

সম্প্রতি তার স্বামী পৈতৃক সম্পত্তিতে একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিলে নুরুল আমিন থানার পুলিশ নিয়ে এসে কাজে বাধা দেন।

নাজমার আরও অভিযোগ, “নুরুল আমিন অতীতে আমার বাড়ির দরজায় খারাপ উদ্দেশ্যে টোকা দিয়েছেন।

পরে ভবন নির্মাণের সময় আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তিনি পুলিশের ভয় দেখিয়ে কাজ

বন্ধ করে দেন এবং জমির মালিকানা নিয়ে মামলা করান।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা মো. তোফায়েল আহম্মদ, সফিকুর রহমান ও আব্দুর রহমান সৈয়াল জানান, নাজমা দীর্ঘদিন ধরে তার পৈতৃক সম্পত্তিতে বসবাস করছেন।

তিনি পুরোনো ঘর ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করতে গেলে নুরুল আমিন তার চাচাকে দিয়ে মামলা করিয়ে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন।

স্থানীয় মিজানুর রহমান বলেন, “নুরুল আমিন প্রথমে ৬ ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দেন, যা মেনে নিয়েও নাজমা ভবন নির্মাণ শুরু করেন।

এখন অহেতুক বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। থানার সামনে দোকান থাকার কারণে তিনি পুলিশের ভয় দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।”

সৈয়াল বাড়ির বাসিন্দা নাসির হোসেন অভিযোগ করেন, মামলার বাদী সৈয়দ আহম্মদ এখানে থাকেন না এবং তার তেমন কোনো আগ্রহও নেই।

নুরুল আমিনই মূলত তাকে দিয়ে কৌশলে মামলা করিয়েছেন।

নুরুল আমিনের বক্তব্য

অভিযোগের বিষয়ে নুরুল আমিনের স্ত্রী রোজিনা আক্তার জানান, “আমাদের অনেক জমি রয়েছে, কিন্তু তা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তাই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।”

নুরুল আমিন নিজেও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি দীর্ঘ ২২-২৩ বছর ধরে থানার সামনে চায়ের দোকান চালাই, পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে—এটা সত্য।

তবে আমি কাউকে ভয় দেখাইনি বা প্রভাব খাটাইনি। আমি কেবল আমার জমির ন্যায্য অধিকার চেয়েছি এবং

আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পুলিশ নিয়ে গিয়ে কাজ বন্ধ করিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “নাজমার কাছ থেকে আমি কোনো টাকা দাবি করিনি বা তার দরজায় কুমতলবে টোকা দেইনি।

আমার চাচা সৈয়দ আহম্মদ মামলার বাদী, আমি শুধু সাক্ষী।”

পুলিশের বক্তব্য

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হাইমচর থানার এএসআই আবু হানিফ বলেন, “আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি।

ৎনুরুল আমিন থানার সামনে দোকান চালান বলে তার সঙ্গে আমার কোনো বিশেষ সম্পর্ক নেই। মামলা করেছেন তার চাচা, নুরুল এখানে মূল অভিযুক্ত নন।”

এ বিষয়ে হাইমচর থানার সেকেন্ড অফিসার সমীর দাস বলেন, “কোনো চায়ের দোকানদার যদি থানার নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার করেন, সেটি আইনসিদ্ধ নয়।

আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করছি এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপসংহার

স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যদের হয়রানি করতে না পারে এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হয়।

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *