সদর উপজেলার বাখরপুর গ্রামে সন্তানের জীবন বাঁচাতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মা-ছেলের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার : সদর উপজেলার বাখরপুর গ্রামে (চান্দ্রা ইউনিয়নের) ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা—সন্তানকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন এক মা।
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা পরিবারটির আনন্দের দিন মুহূর্তেই পরিণত হয় শোকের মাতমে।
ঘটনাটি ঘটেছে ৯ এপ্রিল, বুধবার সকালে।
নিহতরা হলেন—বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেনের স্ত্রী খাদিজা আক্তার (২৮) এবং তার সাত বছর বয়সী শিশু পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক।
পরিবারের সদস্যরা জানান,
ঢাকায় বসবাসকারী খাদিজা আক্তার কয়েকদিন আগে ঈদের ছুটিতে স্বামী-সন্তানসহ গ্রামে বেড়াতে আসেন।
বুধবার সকালে তার দুই শিশু সন্তান পুকুরে গোসল করতে গেলে আচমকাই ছোট সন্তান পানিতে ডুবে যেতে শুরু করে।
মা খাদিজা প্রথমে বড় ছেলেকে উদ্ধার করতে সম হন।
কিন্তু এরপর ছোট ছেলেকে পানিতে হিমশিম খেতে দেখে তিনিও উদ্ধার করতে ঝাঁপ দেন।
দুর্ভাগ্যবশত, খাদিজা নিজেও সাঁতার জানতেন না। ফলে মা-ছেলে দুজনই পুকুরের গভীর পানিতে তলিয়ে যান।
কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন তাদের উদ্ধার করে দ্রুত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান, তবে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. বেলাল হুসাইন তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক ডা. বেলাল জানান,
“স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, সন্তানদের পানিতে ডুবে যেতে দেখে খাদিজা আক্তার নিজেই ঝাঁপ দেন, কিন্তু সাঁতার জানতেন না বলেই প্রাণ রা করা সম্ভব হয়নি।
হাসপাতালে আনার আগেই তারা মারা যান।”
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই,
একই দিনে চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামেও ঘটে আরেকটি পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা।
দুই বছর বয়সী শিশু মাকসুদা আক্তার বাড়ির পাশে খেলা করার সময় অসাবধানতাবশত পুকুরে পড়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করলেও ততণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
নিহত শিশুটি ফজলুর রহমানের কন্যা।
এই হৃদয়বিদারক দুইটি ঘটনা আবারও প্রমাণ করে—গ্রামবাংলার খোলা পুকুর, সাঁতার না জানার ঝুঁকি এবং শিশুদের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
সতর্কতা ও সচেতনতাই এমন অনাকাঙ্তি মৃত্যুর ঘটনা প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।
শিশুদের পানির ধারে একা না যাওয়া এবং সাঁতার শিা ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।

