শাহরাস্তিতে কোরবানির পশুর চাহিদা ১৭ হাজার প্রস্তুত আছে ১২ হাজার
জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া : শাহরাস্তিতে কোরবানির পশুর চাহিদা ১৭ হাজার প্রস্তুত আছে ১২ হাজার। উপজেলায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর বাজারে চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর শাহরাস্তি জুড়ে গরু ও খাসিসহ প্রায় ১৭ হাজার পশুর প্রয়োজন পড়বে।
এর মধ্যে গরুর চাহিদা ধরা হয়েছে ১৪ হাজার এবং খাসির প্রয়োজন প্রায় ৩ হাজার।
স্থানীয় খামারিদের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও পারিবারিক খামারে প্রায় ১০ হাজার গরু ও ২ হাজার খাসি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
অর্থাৎ, মোট প্রস্তুত পশুর সংখ্যা ১২ হাজার হলেও, চাহিদার তুলনায় এখনও ৫ হাজার পশুর ঘাটতি রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই ঘাটতি পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও জেলার পশু সরবরাহের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে।
শাহরাস্তি উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাকসুদু আলম জানান, “আমরা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
পশুর হাটগুলোতে বিনামূল্যে মেডিকেল টিম মোতায়েন থাকবে, যারা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে গর্ভধারণ শনাক্তকরণ পর্যন্ত সব ধরনের সেবা প্রদান করবেন।
এর মাধ্যমে ক্রেতারা নিশ্চিতভাবে সুস্থ ও নিরাপদ পশু কিনতে পারবেন।”
পশুর স্বাস্থ্যসেবা এবার আরও উন্নত
এ বছর পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার মান আগের তুলনায় উন্নত করা হচ্ছে।
প্রতিটি হাটেই থাকবে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম, যারা কোরবানির পশুগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দেবেন।
এর ফলে গর্ভবতী পশু শনাক্ত করা, অসুস্থ পশু থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি কমে আসবে।
খামারিদের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা
উপজেলার নামকরা খামার ‘শাহরাস্তি এগ্রো’-এর কর্ণধার সাখাওয়া হোসেন বলেন, “আমরা ১৪টি গরু ঈদের জন্য প্রস্তুত করেছি।
এসব গরু প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করেছি—কোনো প্রকার কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ নেই। আশা করছি, এবার ক্রেতারা আমাদের খামার থেকে সন্তুষ্ট হয়ে পশু কিনবেন।”
অপরদিকে, উপজেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার ‘এম এস এগ্রো’-এর মালিক মোশারফ হোসাইন জানান, “আমার খামারে বর্তমানে ১০০টিরও বেশি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আমরা কয়েক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি এবং পশুগুলোকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসম্মত খাদ্য দিয়েছি।
বাজার ভালো হলে এবার ভালো দামে বিক্রি হবে বলে আশা করছি।”
যারা কোরবানির পশু কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই বছর শাহরাস্তির পশুর হাটগুলো হতে পারে একটি নিরাপদ ও ভরসাযোগ্য গন্তব্য।
কারণ, এখানকার পশুদের অনেকটাই স্থানীয় খামারেই লালন-পালন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ থাকছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
ফলে ক্রেতারা নিরাপদ ও সুস্থ পশু কিনে ঈদের কোরবানি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।

