শাহতলীর পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

শাহতলীর পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

উপজেলা সংবাদ সদর উপজেলা স্লাইড

শাহতলীর পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

শাহতলীর পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্নস্টাফ রিপোর্টার :  শাহতলীর পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।   চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহতলীর প্রখ্যাত আলেম, হযরত মাওলানা আবুল বাশার (দা.বা.)-এর জানাজা ও দাফন গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বাদ জোহর মরহুমের নিজ বাড়ি ও মাদ্রাসা মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মরহুমের খলিফা মাওলানা আবু জাফর। জানাজা শেষে মরহুমকে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার সম্মুখে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরীর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক অ্যাডভোকেট ইকবাল বনি বাশার, শাহতলী কামলি মাদ্রাসার এডহক কমিটির দাতা সদস্য এবং দৈনিক চাঁদপুর খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী, চাঁদপুর জেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ খোকন, মরহুমের বড় সাহেবজাদা মাওলানা হলালসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক মেঘনা বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক গিয়াস উদ্দিন মলিন, চাঁদপুর জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, মরহুমের ভাই মাওলানা কারী আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।

প্রবীণ এই আলেমে দ্বীন গত বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ১০০ বছর। তিনি ছয় ছেলে, পাঁচ মেয়ে ও অগণিত ভক্ত-অনুসারী রেখে গেছেন।

মাওলানা আবুল বাশার পীর সাহেবের জীবন ও কর্ম :

শাহতলীর পীর সাহেব নামে সমধিক পরিচিত মাওলানা আবুল বাশার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন চরমোনাইর (প্রথম) পীর হযরত মাওলানা শাহ সাঈদ ইসহাক (রহ.)-এর খলিফা। এছাড়াও তিনি দেওবন্দি ধারার শায়খুল হাদিস মাওলানা যাকারিয়া (রহ.) ও শায়খ আব্দুল হাফিজ মাক্কী (রহ.)-এর কাছ থেকেও খিলাফতপ্রাপ্ত হন।

প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে তিনি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় কাজে ব্যাপৃত ছিলেন। দেশ-বিদেশে তার অসংখ্য মুরিদ ও ভক্ত রয়েছেন। তিনি ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, গাজীপুর, সিলেট, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনায় মসজিদ-মাদ্রাসা এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করেছেন।

মাওলানা আবুল বাশারের জন্ম শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া গ্রামে। পরবর্তী সময়ে তিনি চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী শাহতলী গ্রামে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। তার পিতা ছিলেন আব্দুল কাদের (রহ.) এবং মাতা ছিলেন সায়েদা হালিমা খাতুন।

তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে উচ্চতর ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে দারুল উলুম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদিস অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.)-এর নিকট থেকে হাদিস শাস্ত্রে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। তার শিক্ষাজীবনের প্রতিটি পর্যায়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী।

পীর সাহেব শাহতলী সারাজীবন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তার ইন্তেকালের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ এক মহান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। তার রেখে যাওয়া কাজ ও আদর্শ আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *