ফরিদগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর ২৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে উধাও স্ত্রী
মো: মনির হোসেন : ফরিদগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর ২৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে চুরি করে পালিয়েছে স্ত্রী তাছমিয়া আক্তার ইভা।
লোহাগড় এলাকায় একটি বিতর্কিত ঘটনায় প্রবাসী স্বামী ইয়াসিন হোসেন সুজনের স্ত্রী তাছমিয়া আক্তার ইভা তার স্বামীর প্রায়
২৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয়দের বক্তব্য
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহাগড় গ্রামের মো. শফিক বেপারীর একমাত্র ছেলে ইয়াসিন হোসেন সুজনের সঙ্গে দক্ষিণ পাইকপাড়া পালতালুক গ্রামের আ. কুদ্দুসের মেয়ে তাছমিয়া আক্তার ইভার শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র তিন মাস পরই ইয়াসিন বিদেশ গমন করেন।
ইভার পরিবারের একজন চাচা স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী হলেও তার চরিত্র নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে।
তিনি ইয়াসিনের কাছ থেকে রড-সিমেন্ট দেওয়ার নামে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেও তা দিতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তার প্রভাব খাটিয়ে টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়নি এবং নির্মাণ সামগ্রীও সরবরাহ করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, তার ভদ্রতার আড়ালে রয়েছে মাদকাসক্তি এবং লোভের প্রবণতা।
এছাড়া ইভার বড় বোন তাহসিনা আক্তার ইকরাও একই পদ্ধতিতে একজন কলেজ শিক্ষক থেকে তালাক নিয়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
একইভাবেই ইভা ইয়াসিনের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা দাবির পাশাপাশি তাকে ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়েছেন।
তাছমিয়া আক্তার ইভা একজন জনপ্রিয় টিকটক ব্যবহারকারী। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে পারিবারিক সমস্যা গভীর,
যেখানে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এসব কারণে সে স্বামীর বাড়িতে কম সময় কাটিয়ে নিজের বাবার বাড়িতেই বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করেন।
এ সময় ইভা নানা অজুহাত দেখিয়ে স্বামীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে এবং পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতেন।
এসব কথা জানার পর স্বামী তাকে নিষেধ করলে বিষয়গুলো আরও জটিল হয়ে ওঠে। ইভার মা ও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সমাধান বা সমর্থন না পাওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
গত ২৩ জুন, ইয়াসিনের বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা, গরু বিক্রির ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং স্বামী ও তার বোনের দেয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকার — যার আনুমানিক মূল্য ১৭ লাখ টাকা — ইভা নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফিরেননি।
থানায় অভিযোগ
ইয়াসিনের পিতা শফিক বেপারী তার ছেলে ও পরিবারের হয়ে পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইভার পরিবার উল্টো হুমকি প্রদান করছে।
প্রবাসী ইয়াসিন হোসেন সুজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার বোনের অপারেশনের সময় মা-বাবা আমার স্ত্রীর দেখভাল করতে বাড়িতে রেখে যান।
সেই সুযোগে রাতের আঁধারে আমার স্ত্রী সব কিছু চুরি করে পালিয়ে যায়। দেশে ফিরে আমি তার অপকর্ম বুঝতে পেরে ইভার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা আমাকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছে।
ইভার মা ও চাচা স্বপন অসৎ প্রকৃতির মানুষ, তাদের যোগসাজশে আমি মানহানির শিকার হচ্ছি। আমি প্রবাসী হয়ে দেশের ন্যায়বিচার চাচ্ছি।”
এই ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানা তদন্ত শুরু করেছে এবং পারিবারিক কলহের মীমাংসায় চেষ্টা চলছে।

