দুই মামলায় বিএনপি নেতা শেখ ফরিদসহ ৬৪ নেতাকর্মীর বিচার থেকে অব্যাহতি
স্টাফ রিপোর্টার : দুই মামলায় বিএনপি নেতা শেখ ফরিদসহ ৬৪ নেতাকর্মীর বিচার থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুরে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুইটি রাজনৈতিক মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকসহ ৬৪ জন নেতাকর্মী আদালত থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
এসব মামলায় অভিযোগের পেছনে পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় বিচারক তাদের বিরুদ্ধে আর বিচার কার্যক্রম চালানোর প্রয়োজন মনে করেননি।
২১ মে (বুধবার) দুপুরে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বেগম শামসুন্নাহার এই রায় ঘোষণা করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ও চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বাবর ব্যাপারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার পটভূমি
প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ রাতে, যখন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ ও
হরতালের মধ্যে চাঁদপুর-হাইমচর সড়কে দক্ষিণ বালিয়ায় একটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২৫-৩০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই)
হামিদুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি হিসেবে নাম আসে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের।
দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায়। সেদিন চাঁদপুর শহরের বকুলতলা রোড এলাকায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে ককটেল বিস্ফোরণ ও উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
ওই ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২৫-৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলমান বিচারপ্রক্রিয়ায় মামলার সাক্ষ্য ও আলামত পর্যালোচনা শেষে আদালত এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে না পারায়, বিচারক সবাইকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
উল্লেখযোগ্য অব্যাহতিপ্রাপ্তরা
মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন : চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যাহ সেলিম, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশিদ,
সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জাহাঙ্গীর খান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন খান আকাশ।
আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট বাবর ব্যাপারী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই মামলাগুলো রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক ছিল।
অবশেষে আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার একটি উদাহরণ।”

