জলা-বিতারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি

জলা-বিতারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি

উপজেলা সংবাদ কচুয়া উপজেলা প্রধান সংবাদ

জলা-বিতারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি, এলাকাবাসীর উদ্যোগে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

জলা-বিতারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবিকচুয়া প্রতিনিধি : জলা-বিতারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি এলাকাবাসীর।

উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের ঘোগড়ার বিলের অন্তর্গত জলা-বিতারা গ্রামটি অবহেলিত এক জনপদের নাম।

এখনও কাঁচা রাস্তায় হেঁটে চলাই এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা।

শিক্ষার আলো থেকে অনেকটাই বঞ্চিত এ জনপদে নেই কোনও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নেই কোনো উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা।

গ্রামটির অবস্থান ঘোগড়ার বিলের ঠিক মাঝখানে, যেখানে প্রায় ২ হাজার মানুষের বসবাস। প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে একাধিক কোমলমতি শিশু, যারা প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ মাইল হেঁটে পাশের গ্রামের স্কুলে যেতে বাধ্য হয়।

বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত রাস্তা ও ভাঙাচোরা সাঁকো পার হয়ে স্কুলে পৌঁছানো শিশুদের জন্য হয়ে ওঠে চরম কষ্টসাধ্য।

ফলে অনেক শিশুই বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়, যা শিশুদের পড়ালেখা থেকে ঝরে পড়ার হার বাড়িয়ে তুলছে আশঙ্কাজনকভাবে।

এ অবস্থার পরিবর্তনে জলা-বিতারা গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের।

স্থানীয়দের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছেন গ্রামেরই কিছু সচেতন নাগরিক।

ইতিমধ্যে গ্রামবাসীর উদ্যোগে ‘নাজমুন নাহার বেবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে একটি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যেখানে ৪ জন শিক্ষক ও ১৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করছে।

বিদ্যালয়টির জন্য ৩৩ শতাংশ জমি নিজ উদ্যোগে দান করেছেন স্থানীয় দুই বাসিন্দা জাকির হোসেন ও মনির হোসেন।

বিদ্যালয়টির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মো. কবির হোসেন বলেন,

“আমাদের গ্রামের শিশুরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে দূরের স্কুলে যাচ্ছে। অনেকেই মাঝপথে পড়ে থাকছে।

তাই আমরা সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন এর সহধর্মিণী নাজমুন নাহার বেবীর নামে একটি সরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তার উপস্থিতিতেই ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।”

ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বক্তব্য

বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ব্যাংকার মো. মামুনুর রশিদ মোল্লা বলেন,

“নিজস্ব জায়গা প্রস্তুত রয়েছে। এখন প্রয়োজন সরকারি স্বীকৃতি এবং একটি পূর্ণাঙ্গ বিদ্যালয় ভবন। শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারি সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু ইউসুফ বলেন,

“স্বাধীনতার পর থেকে অবহেলিত এই অঞ্চলে কোনো স্কুল স্থাপিত হয়নি। আমরা জানুয়ারি থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছি। তাই বিদ্যালয়টির দ্রুত অনুমোদন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।”

এদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও বিতারা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম জানান,

“জনস্বার্থে জলা-বিতারা গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।”

শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়া একটি গ্রামের উন্নয়নে স্থানীয়দের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সরকারি অনুমোদন পেলে এটি হবে এলাকার জন্য এক যুগান্তকারী অগ্রগতি। এখন শুধু প্রয়োজন দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ এবং বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ।

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *