চুরি যাওয়া গরুর সন্ধানে বাজারে গিয়ে খোঁজ মিলল কেবল মাথার
স্টাফ রিপোর্টার : চুরি যাওয়া গরুর সন্ধানে বাজারে গিয়ে খোঁজ মিলল কেবল মাথার।
চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডী এলাকার দরিদ্র কৃষক মতিন মিজির জীবিকা চলত তাঁর প্রিয় সাদা দুধেল গাভিটিকে ঘিরেই।
প্রতিদিন গরুটি পাঁচ থেকে সাত কেজি দুধ দিত, যা বিক্রি করে সংসারের খরচ চালাতেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ করেই সেই গাভিটি চুরি হয়ে যায়, আর শুরু হয় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।
রোববার সকালে প্রতিদিনের মতো মাঠে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান গাভিটিকে।
কিছু সময় পর ফিরে গিয়ে দেখতে পান, গাভিটি নিখোঁজ, কেবল বাছুরটি রয়ে গেছে। চারপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও যখন কোনো খোঁজ মেলেনি, তখন হতাশ মতিন মিজি সহায়-সম্বল হারানোর আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েন।
এক প্রতিবেশী তাঁকে জানান, একটি সাদা গরুকে কেউ একজন কাশিমবাজার এলাকা থেকে শহরের দিকে নিয়ে যেতে দেখেছে।
এই সূত্র ধরে মতিন মিজি সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের বিপণীবাগ বাজারে যান।
সেখানে এক কসাইয়ের দোকানে গিয়ে যা দেখলেন, তা ছিল তাঁর জন্য এক নির্মম বাস্তবতা—নিজের গরুর কাটা মাথাটি পড়ে রয়েছে দোকানে।
স্থানীয় কসাই কালা গাজী জানান,
তিনি গরুটি বিটি রোড এলাকার সোহাগ পাটোয়ারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনেছিলেন এবং পরে তা জবাই করে মাংস বিক্রি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে বাজারের ব্যবসায়ীরা সোহাগ পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
মতিন মিজির জামাতা মাসুদুর রহমান জানান, গরুটির বাজারমূল্য ছিল প্রায় দেড় লাখ টাকা, এবং সেটিই ছিল শ্বশুরের একমাত্র উপার্জনের উৎস।
গাভিটি হারিয়ে এখন তিনি চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহার মিয়া বলেন, “গরু চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। আটক ব্যক্তির জবানবন্দি অনুযায়ী পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

