চাঁদপুর সরকারি কলেজে মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা
স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সরকারি কলেজে মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “জীবন একটাই—তাই জীবনকে ভালোবাসুন, মাদক থেকে দূরে থাকুন”—এই হৃদয়স্পর্শী প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত হলো এক প্রেরণাদায়ী মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
তরুণ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত থাকার বার্তা দিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উঠে আসে সচেতনতা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ এবং নৈতিকতার গুরুত্ব।বুধবার, ২৮ মে সকাল ১০টায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং
চাঁদপুর সরকারি কলেজের সহযোগিতায় এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা পর্যায়ের উপস্থিতিতে মিলিত হয় একটি শক্তিশালী বার্তা—“মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অতিথি বৃন্দ
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ. কে. এম. আব্দুল মান্নান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ শেখ মো. খলিলুর রহমান।
সভাপতিত্ব করেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফারজানা শ্রাবনী।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার আলোচ্য বিষয় ছিল—“এই সংসদ মনে করে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার ভূমিকাই মূখ্য।
” এই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিপূর্ণ ও তথ্যভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাদের বক্তব্যে উঠে আসে সমাজ,
পরিবার এবং রাষ্ট্রের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা। বক্তব্যগুলো কেবল যুক্তিনির্ভরই ছিল না,
বরং আবেগ ও বাস্তবতার সম্মিলনে এটি শ্রোতাদের মধ্যে গভীর ভাবনার জন্ম দেয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মান্নান বলেন, “আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেবে।
তবে সেই নেতৃত্বের ভিত্তি হতে হবে সুস্থ জীবনধারা ও নৈতিক মূল্যবোধে।
মাদক একটি ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক বিকাশকে ধ্বংস করে দেয়, যা পরিবার ও সমাজে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিকাশের মাধ্যমেই গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধমূলক সামাজিক প্রতিরক্ষা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতা তৈরির জন্য আরও বেশি কার্যক্রমের প্রয়োজন রয়েছে।”
মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের বক্তব্য
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “মাদক একটি ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এটি একটি জাতীয় সংকট। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে রাষ্ট্র,
পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করতে হবে। আমাদের সন্তানদের ‘না’ বলার শক্তি তৈরি করতে হবে আজ থেকেই।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “শুধু আইন দিয়ে নয়, সামাজিক আন্দোলন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব।”
আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে, যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক জীবনদৃষ্টিভঙ্গি এবং মাদকবিরোধী মনোভাব আরও শক্তিশালীভাবে গড়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

