চাঁদপুর শহরের ইউনাইটেড হাসপাতাল সিলগালা, ৩জন আটক
স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরে এক নবজাতককে কবর দেওয়ার সময় জীবিত উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পুলিশ এই পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগ ও অন্যান্য অনিয়মের কারণে চাঁদপুরের আলোচিত ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতাল’ সম্পূর্ণভাবে সিলগালা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুল হাসান ফয়সল হাসপাতালটি বন্ধ করে দেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে কবরস্থান এলাকার সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে। ফুটেজ দেখে ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে নবজাতকের পরিচয় ও ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ
আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
পুলিশ পৃথক অভিযানে তিনজনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী, একজন নার্স এবং নবজাতকের গর্ভধারী কিশোরীর মা।
ঘটনার পর কবরস্থানের গোর খোদক শাহাজাহান ও চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,
নবজাতকের মা ১৫-১৬ বছর বয়সী কিশোরী, যিনি চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার শোভাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে ৬-৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে জোরপূর্বক চাঁদপুর ইউনাইটেড হাসপাতালে গর্ভপাত করানো হয়।
বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা চলছিল।
উল্লেখযোগ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে এক জীবিত নবজাতককে কবর দেওয়ার জন্য শহরের পৌর কবরস্থানে পাঠানো হয়।
কবর খোঁড়ার সময় গোর খোদক শিশুটিকে জীবিত দেখতে পান এবং ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকদের জানান।
পরে সাংবাদিক মুসাদ্দেক আল আকিব ও আশিক বিন রহিমসহ অন্যান্য স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা নবজাতককে উদ্ধার করে
চাঁদপুর ফেমাস স্পেশালাইজড হসপিটালের এনআইসিউতে ভর্তি করেন। নবজাতক আট ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর শেষমেষ মারা যায়।
এই ঘটনা প্রকাশের পর দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে মানবিক সহানুভূতির পরিচয় দেওয়া ওই সাংবাদিকদের প্রচেষ্টা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

