অবৈধ বাহনে ধ্বংস হচ্ছে চাঁদপুরের গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনা

অবৈধ বাহনে ধ্বংস হচ্ছে চাঁদপুরের গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনা

উপজেলা সংবাদ ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাহরাস্তি উপজেলা স্লাইড হাইমচর উপজেলা হাজীগঞ্জ উপজেলা

অবৈধ বাহনে ধ্বংস হচ্ছে চাঁদপুরের গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনা

অবৈধ বাহনে ধ্বংস হচ্ছে চাঁদপুরের গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনাস্টাফ রিপোর্টার : অবৈধ বাহনে ধ্বংস হচ্ছে চাঁদপুরের গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনা।

চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে বেপরোয়াভাবে চলছে অবৈধ যন্ত্রচালিত বাহন, যার প্রভাবে নষ্ট হচ্ছে সড়ক অবকাঠামো এবং বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

স্থানীয়রা বলছেন, এসব অবৈধ যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করলে গ্রামীণ সড়কগুলোর স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

চোখে পড়ার মতোভাবে জেলার চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে চলছে

‘ভটভটি’ নামে পরিচিত সেচযন্ত্র চালিত যান এবং ট্রাক্টরের মতো ভারী মালবাহী অবৈধ যানবাহন।

এই বাহনগুলো মূলত কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হলেও এখন পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

শ্যালো ইঞ্জিনে তৈরি এসব বাহনের নেই কোনো বৈধ রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ বা লাইসেন্স।

যান্ত্রিক দিক থেকে অপ্রতুল এসব বাহনের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, আর এতে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা।

মেহের ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জানান, বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই না করে তৈরি করা এসব বাহনের ব্রেকিং সিস্টেম অনিরাপদ, যা সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন,

পুলিশের চোখের সামনেই এসব বাহন চলে, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সভাপতি মো. বারাকাত উল্লাহ পাটওয়ারী বলেন,

“বহুবার সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হয়েছে, কিন্তু আইনি পদক্ষেপ না থাকায় এগুলো রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।”

ব্যবহারের ধরন ও ক্ষতির পরিমাণ

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কম খরচে পণ্য পরিবহনের জন্য কৃষি ট্রাক্টরের সঙ্গে ট্রলি যুক্ত করে তা ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাক বা পিকআপের বিকল্প হিসেবে।

এতে জমির মাটি, বালু, কাঠ, সিমেন্ট এমনকি সবজিও পরিবহন করা হচ্ছে।

ফলস্বরূপ সড়কে অতিরিক্ত ওজনের চাপ পড়ছে এবং তৈরি হচ্ছে ধুলাবালিতে ভরা ভাঙাচোরা রাস্তা।

নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের উদ্যোগ

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানিয়েছেন,

চাষাবাদের বাইরে এসব যানবাহনের সড়কে চলাচল বেআইনি এবং এদের বিরুদ্ধে থানাগুলোতে নির্দেশনা দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, “ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে এবং আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জনসচেতনতা ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান

স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, সড়কের স্থায়িত্ব রক্ষা এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ ও কঠোর আইন প্রয়োগ। এ বিষয়ে প্রশাসন, ট্রাফিক বিভাগ এবং সাধারণ জনগণ সবাইকে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে।

অবৈধ যান চলাচল বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এবং অবকাঠামোগত ক্ষতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

Daily Chandpur Sangbad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *