অগ্রণী ব্যাংকের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ: দুদকের মামলা দায়ের
অগ্রণী ব্যাংকের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ: দুদকের মামলা দায়ের। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি’র ছেংগারচর বাজার শাখার ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা দায়ের করেছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুদক চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আজগর হোসেন বাদী হয়ে ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) দীপঙ্কর ঘোষকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
কীভাবে ধরা পড়ল প্রতারণা?
অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া প্রথমে বিষয়টি সন্দেহ করেন এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে দুদক মামলার অনুমোদন দেয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, অফিসার দীপঙ্কর ঘোষ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন,
যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অজ্ঞাতবাসে অভিযুক্ত, সন্দেহ বাড়তে থাকে
ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার দীপঙ্কর ঘোষ গত বছরের ২৯ আগস্ট অফিসে না আসায় তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়।
তখন তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তাই দেরি হবে। কিন্তু পরে তিনি আর অফিসে ফেরেননি এবং ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
সন্দেহজনক পরিস্থিতি তৈরি হলে তার স্ত্রী আঁখি সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, দীপঙ্কর অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছেন।
কিন্তু দিন শেষে ব্যাংকে তার অনুপস্থিতি রহস্য ঘনিভূত করে।
ভল্ট খোলার পর বেরিয়ে আসে সত্য
৩০ আগস্ট ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের কর্মকর্তারা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের উপস্থিতিতে ভল্ট খোলা হলে দেখা যায়,
সেখানে থাকা ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সার মধ্যে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুপস্থিত।
ব্যাংকের ভল্ট থেকে কীভাবে টাকা উধাও?
তদন্তে উঠে এসেছে, দীপঙ্কর ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে অফিসে আসা-যাওয়া করতেন।
ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে তার কাছে ভল্টের একটি চাবি ছিল, যা ব্যবহার করে তিনি ধাপে ধাপে টাকা সরিয়ে নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত তিনি পলাতক রয়েছেন, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির এই ঘটনায় ব্যাংক ও স্থানীয় প্রশাসন কড়া নজরদারি বাড়িয়েছে।

